নবজাতকের যত্মে যা খেয়াল রাখা খুবই জরুরি

সন্তান সবার প্রিয় ধন। যাকে ঘিরে একটি সংসার আনন্দময় হয়ে উঠে। জন্মের আগে থেকেই তাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য অপেক্ষায় থাকে পরিবারের সদস্যরা। মায়ের চিন্তার শেষ থাকে না কিভাবে শিশুকে লালন পালন করবে। কিভাবে তার পরিচর্যা করা যায়।

আর একজন নতুন মা অনেক কিছুই জনেন না কিভাবে তার শিশুকে টেক কেয়ার করতে হবে। বিশেষত একক পরিবারের জন্য এটা আরও বড় সমস্যা। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ‘মা হচ্ছেন সন্তানের জন্য সবচেয়ে বড় ডাক্তার।’ তার চেয়ে সন্তানের অবস্থা আর কে ভাল বুঝতে পারে। শুধু প্রয়োজন একটু সতর্ক থাকা। অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হলো। 

নবজাতককে গোসল করানোর নিয়ম:

নবজাতককে গোসল করানোর ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকতে হয়। কারণ নতুন পরিবেশে আসার পর ওর মানিয়ে নেয়ার একটা ব্যাপার থাকে। তাই জন্মের ৭ দিনের মধ্যে গোসল না করানোই ভাল। প্রথম দিকে ১০-১৫ দিন পরে গোসল করানো ভাল।  

বাবুর যদি ঠাণ্ডা লাগে বা আবহাওয়া যদি রোদ্রজ্জল না হয়, মেঘলা হয় তবে গোসল না করানোই ভালো। প্রকৃতপক্ষে কোনদিন বাবুকে গোসল করানো ঠিক হবে না, এটা মাকেই বুঝতে হবে।

প্রতিদিন গোসলের সময় হালকা গরম পানি দিয়ে করাতে হবে। আর ১১ টা থেকে ১২ টার ভেতরে গোসল করোনো ভাল।

নবজাতকের শরীর ম্যাসাজ করে দেয়া:

প্রতিদিন সকালে বাবুকে ঘুম থেকে উঠার পর নরম পাতলা সুতি কাপর দিয়ে মুখ মুছে দিতে হবে। বাবুকে তেল বা লোসন দিয়ে হাত পা শরীর মালিশ করতে হবে। এতে করে বাচ্চার দেহের হাড়ের জড়তা কেটে যাবে।

বুকের দুধ পান করানোর নিয়ম:

বাচ্চাকে স্তন পান করানোর আগে অবশ্যই দুই হাত ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। অনেক সময় মা পরিশ্রম করে ঘেমে যান। আর বাবু কান্না করলে ওভাবেই স্তন পান করানো শুরু করেন। এতে বাবুর নানা ধরনের অসুখ বিসুখ হতে পারে। অবশ্যই পান করানোর আগে স্তন ধুয়ে নিতে হবে। 

নবজাতকের কাঁথা কাপড় পরিস্কার রাখা:

বাচ্চার প্রয়োজনীয় জামা-কাপড়, বালিশ, ছোট কাঁথা নিয়মিত ভাল করে পরিস্কার করতে হবে। কখনো প্রস্রাব করা কাপড় পরিধান করিয়ে রাখবেন না। এতে করে বাবুর শরীরে র‌্যাস হতে পারে।

অতিরিক্ত ডায়াপার পরানো:

আজকাল অনেক মা কষ্ট লাঘবের জন্য টানা ডায়াপার পরিয়ে রাখেন। এতে বাবুর বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। টানা ডায়াপার পরিয়ে রাখলে ছেলে বাবুরা ঠিকমতো প্রস্রাব করতে পারে না। এতে পুরুষাঙ্গে বড় ধরণের সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর ভেজা ডায়াপারের স্যাতস্যাতে পরিবেশও শিশুর জন্য ভালো নয়। এখানে একটা বিষয় বলে রাখা ভালো, ডায়াপার পরালেওই যে সমস্যা হবে তা নয়, কিন্তু অনেকেরই এজন্য সমস্যা তৈরি হয়। এজন্য ডাক্তাররা অতিরিক্ত ডায়াপার পরিধান করানোকেই দায়ি করেন।

বাবুর বিছানা পরিস্কার রাখা:

শিশুর বিছানায় যেন পিপড়া না উঠতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য শিশূুর বিছানা ভাল করে পরিস্কার রাখতে হবে। বিছানায় যেনো খাবার না পরে সেদিকে সথাসম্মাভব চেষ্ঝেটা করতে হবে। পরলেও ধুয়ে পরিস্কার রাখতে হবে। মাঝে মাঝে বাবুর বিছানা থেকে শুরু করে বেবির ব্যবহৃত সবকিছু কড়কড়ে রোদে শোকাতে হবে। তাহলে পোকামাকড় বাসা বাঁধতে পারবে না।

শিশুকে খাওয়ানোর ক্ষেত্রে সতর্কতা:

শিশুর বয়স ছয় মাস হলে বুকের দুধের পাশাপাশি বাইরের খাবার দিতে পারেন। বাইরের খাবার দেয়ার সময় কিছু বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। খাবারগুলো যেনো পুষ্টিকর, স্বাস্থসম্মত হয়। অবশ্যই ঠাণ্ডা খাবার বাবুকে দেবেন না। দেয়ার আগে গরম খাবার দেবেন। আর চেষ্টা করবেন বাসি খাবার বাবুকে না দেয়ার। খাওয়ানোর আগে ভাল করে হাত দুয়ে নেবেন। যার তার হাতে বাচ্চাদের খাওয়ানো উচিত নয়।

শিশুকে চুমু দেয়া পরিহার করুন:

নবজাতক তো বটেই কোনো শিশুকেই চুমু দেয়া ঠিক নয়। আর পরিবারের বাইরে তো অবশ্যই নয়। এতে বিভিন্ন ধরনের রোগ-জীবাণু শিশুর শরীরের চলে আসতে পারে। অন্য মানুষকে চুমু দেয়া থেকে বিরত রাখা একটু কঠিন বটে; কিন্তু আমাদের সকলের সচেতনতা শিশুকে সুস্থ সবলভাবে গড়ে উঠতে সাহায্য করতে পারে।

সব সময় মনে রাখবেন নিজের কিংবা পরিবারের একটু বেখেয়ালের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই বাচ্চাকে সুস্থ রাখতে চাইলে অবশ্যই পরিবারের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। আর এক্ষেত্রে মায়ের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। 

সার্চিং কিওয়ার্ড: নবজাতকের পরিচর্যা, নবজাতকের লালন পালন, শিশুর যত্ম করতে হয় কিভাবে, শিশু জন্মের পর করণীয়, শিশুকে খাওয়ানোর নিয়ম

Lovely Azad: I am Lovely Azad, a girl, wife and Mom. Also I am a Passionate Blogger and Social Media Expert. I love to write about kid, mom, food and any social trend. Please read and express your views about my write up.
Related Post