শিশু জন্মের পর মায়েদের ডিপ্রেশনের কারণ ও সমাধান

বেশ কিছুদিন ধরেই পরিচিত অনেক নতুন মা-ই ফোনে, এসএমএস করে জানাচ্ছেন, বাবু জন্মের পর থেকেই মেজাজ খিটমিটে হয়ে গেছে। অকারণেই কোনো কিছু ভাল লাগে না। তুচ্ছ কারণে চিৎকার চেচামেচি করতে ইচ্ছে করে। আপনারও কি এমন হয়?

বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপেও দেখছি অনেকেই তাদের এই বাজে অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছেন। তাদেরকে বলেছি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে কিভাবে এথেকে বের হয়ে আসা যায়। সেই কথাগুলোই সংক্ষেপে তুলে ধরছি। কেনো শিশু জন্মের পর মায়েদের মেজাজ খারাপ থাকে আর এর সমাধানই বা কি?

শিশু জন্মের পর মায়েদের বিশেষত নতুন মায়েদের ডিপ্রেশন/হতাশা/মেজাজ খিটখিটে হওয়া/ অল্পতেই রেগে যাওয়ার বেশ কিছু কারণ আছে। আর এই কারণগুলো আমরা মায়েরা নিজেরাই সৃষ্টি করি। আর বেশ কিছু কারণ আছে পরিবেশের জন্য হয়।

সন্তান নিয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকা

আমরা মায়েরা শিশু জন্মের পর তাকে লালন পালন নিয়ে ব্যস্ত থাকি। বাচ্চার খাবার, গোসল, ঘুম সকল দিক দিয়ে মাকেই সর্বত্র চোখ রাখতে হয় শিশুর দিকে। এমনকি মায়েরা বলে থাকেন, বাচ্চা নিয়ে চুল আচড়ানো, ব্রাশ করার সময়ও পাই না। মুখে ক্রিম মাখার সময় আর কই। অবশ্যই নিজের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে নিজের যত্ন নিতে হবে। কারণ সকল স্বামীই নিজের প্রতি যত্নশীল বউকে পছন্দ করেন।

স্বামীকে সময় কম দেয়া

আমরা অবচেতনভাবেই ভুলে যাই যে এই বাচ্চা ছাড়াও অামাদের জীবনে আরো একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি অাছেন।  তিনি হলেন তার স্বামী। স্বামী হওয়া উচিত বন্ধুর মতো। যার কছে গেলে কথা বললে মুহূর্তেই মন ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু সন্তান হওয়ার পর আমরা একদমই স্বামীকে খেয়াল করিনা। ফলে তিনি ফেইসবুকে, নয়তো চ্যাটিং এ, নয়তো ফোনে কথা বলে, নয়তো টিভি দেখে কিংবা কম্পিউটারে বিভিন্ন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখে। কষ্ট হলেও স্ত্রীর উচিত স্বামীর জন্য সময় বের করা। এতে দুজনেরই মন ভালো থাকবে।

শারীরিক সম্পর্ক থেকে দূরে থাকা

এই সময়ে স্বামী এমনিতেই তার প্রিয় মানুষের কাছে থেকে দূরে থাকে। বাচ্চা জন্মের দুই এক মাস আগে থেকে শুরু করে বাচ্চা হওয়ার পর দেড় মাস পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শারিরীক সম্পর্ক হয় না। এতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরাট গ্যাপের সৃষ্টি হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় সন্তান লালন-পালনের প্যারা। এসব মা-কে বিষন্নতায় ভোগায়।

স্বামী আর সময় দেয় না বলে অভিযোগ

নতুন মায়েরা শিশুকে সময় দিতে গিয়ে একদমই ভুলে যায় তার স্বামীকে। এর ফলে স্বামী স্ত্রীর প্রতি অমনোযোগী হয়ে পরে। অন্যদিকে স্ত্রী অভিযোগ করতে থাকে, স্বামী আমাকে আগে অনেক ভালোবাসতো, এখন আমাকে সময় দেয়না, আমার দিকে ফিরেও তাকায় না, আমাকে আর ভালোও বাসে না ইত্যাদি। এই নিয়ে কথা কাটাকাটি করে সম্পর্কে আরো অবনতি ডেকে আনে। এমনকি অনেক সময় এই সকল সমস্যা বড় রুপ ধরে পরবতীর্তে তালাকের পর্যায় চলে যায়। কিন্তু আসলে কেউ কাউকে কম ভালোবাসে না। বরং বেশি ভালোবাসে বলেই এই সমস্যা। শিশু জন্মের আগে যে পরিমাণ সময় আপনি আপনার স্বামীকে দিতেন, এখন কি সেই সময় টা দিতে পারছেন। আর এখান থেকেই শুরু হয় দ্বন্দ্ব। তাই অবুঝের মতো না করে পরস্পরকে বুঝতে হবে। একজন আরেকজনকে উপলব্ধি করতে হবে।

সন্তান নিয়ে ব্যস্ততায় মায়েদের ঘুম কম হওয়া

সাধারণত ছোট শিশুরা রাতে জেগে থাকে, দিনে ঘুমায়। ফলে মা রাতে শিশুর সঙ্গে জেগে থাকে, কিন্তু দিনে শিশুর সঙ্গে ঘুমাতে পারে না। কারণ সংসারের অন্যান্য ঝামেলা থাকে। দিনে মা যতটুকু ঘুমায় তাতে মায়েদের পর্যাপ্ত ঘুম হয় না। কম ঘুম হওয়ার কারণেই মায়েদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।

মায়েদের খিটখিটে ভাব কাটানোর উপায়

মায়েদের খিটখিটে ভাব কাটানোর জন্য প্রথমত ধৈর্য শক্তি বাড়াতে হবে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করতে হবে। একটা বিষয় পরিস্কার মনে রাখতে হবে, বিয়ের পরে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের পরিপূরক। একজন আরেক জনের বুকে মাথা রেখে পুরো দুনিয়ার দু:খ কষ্ট ভুলে যেতে পারে। আল্লাহ এভাবেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বন্ধন তৈরি করে দিয়েছেন। নতুন মায়েদের খিটখিটে ভাব দূর করানোর জন্য পড়ুন: সন্তান জন্মের পর মায়েদের ডিপ্রেশন/হতাশা/খিটখিটে ভাব কাটানোর উপায় পোস্টটি।

শিশু জন্মের পর বেশিরভাগ মায়েরই মেজাজ খিটমিটে হয়ে যায়। অকারণেই কোনো কিছু ভাল লাগে না। তুচ্ছ কারণে চিৎকার চেচামেচি করতে ইচ্ছে করে।  কিন্তু মায়েদের মেজাজ খারাপের সমাধানই বা কি? নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই এ  কথাগুলোই সংক্ষেপে তুলে ধরছি।

Lovely Azad: I am Lovely Azad, a girl, wife and Mom. Also I am a Passionate Blogger and Social Media Expert. I love to write about kid, mom, food and any social trend. Please read and express your views about my write up.
Related Post