সন্তান জন্মের পর মায়েদের ডিপ্রেশন/হতাশা/খিটখিটে ভাব কাটানোর উপায়

একটি সুখি পরিবারের মডেল হয়েছেন জাতী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান দম্পত্তি।

বেশিরভাগ মায়েদেরই সন্তান জন্ম নেয়ার পর মেজাজে খিটখিটে ভাব চলে আসে। মায়েদের খিটখিটে ভাব বা হতাশার জন্য মূলত দায়ি নিয়মিত ঘুম না হওয়া, বিশ্রাম না পাওয়া, সন্তান নিয়ে সার্বক্ষণিক ব্যস্ততা, স্বামী সঙ্গ কম পাওয়া প্রভৃতি কারণ।

আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন জনের কাছ থেকে শোনা অভিজ্ঞতার আলোকে মায়েদের ডিপ্রেশন বা খিটখিটে ভাব কাটানোর উপায়গুলোর বলার চেষ্টা করবো।

তবে এর আগে আপানারা (শিশু জন্মের পর মায়েদের ডিপ্রেশন/হতাশা/খিটখিটে ভাবের কারণ) এই পোস্টটি দেখে নিতে পারেন। সমস্যা কেন তা জানলে সমাধান করা সহজ হবে। তবে আসুন দেখে নিই নতুন মায়েদের ডিপ্রেশন কাটানোর কি কি উপায় রয়েছে।

স্বামীর সঙ্গে একান্ত সময় কাটানো

একটা বিষয় পরিস্কার মনে রাখবেন, স্বামী যদি আপনাকে ভালবাসে তবে তার সান্নিধ্যেই আপনার বেশিরভাগ মানষিক রোগ ভাল হয়ে যাওয়ার কথা। তার সঙ্গে সব কথা মন খুলে শেয়ার করুন দেখবেন আপনি অনেক হালকা হয়ে গেছেন। তিনি আপনাকে যে মানষিক সাপোর্ট দিতে পারবেন তা আর কেউ দিতে পারবে না। তাই তার সঙ্গে একান্ত সময়ে আপনার খারাপ লাগা, অস্বস্তির কথাগুলো বলুন। দেখবেন আপনিই অনেকটাই নির্ভার বোধ করছেন।

শারীরিক সম্পর্ক নিয়মিত করুন

স্বামীর সঙ্গে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক দুজনকেই অনেক মানষিক চাপ থেকে মুক্তি দয়ে, এটাতো গবেষণায় প্রমানিত। তাই স্বামীর সঙ্গে নিয়মিত শারীিরিক সম্পর্কে মিলিত হোন। এতে আপনি সাময়িক মানষিক ডিপ্রেশন থেকে রেহাই পাবেন। দুজনের মধ্যে একটা চমৎকার বোঝাপড়া গড়ে ওঠবে, যা আপনাকে হতাশা কাটাতে সাহায্য করবে।

নিজেকে ফ্রেস রাখুন ও উপভোগ করুন

সন্তান জন্ম দেয়ার পরের মানষিক বিষন্নতা কাটানোর জন্য আপনাকেই সমাধান খুঁজতে হবে। শিশুর সাথে সাথে আপনার প্রিয় মানুষটির জন্যও কিছু সময় বের করুন। স্বামী যখন বাসায় থাকে তখন তাকে আলাদা করে সময় দিন। শিশু ঘুমিয়ে গেলে স্বামীর সাথে গল্পে মাতুন। এক সাথে টিভি দেখুন। তার পছন্দের খাবার তৈরি করে দিন। সে যেদিন বাসায় থাকে সেদিন একটু সাজগোজ করে তাঁকে আনন্দ দিন। দেখবেন স্বামীকে খুশি করতে গিয়ে আপনার মনও ভালো হয়ে গেছে।

নিজের ঘুমের জন্য সময় বের করা

মায়েদের খিটখেটে মেজাজ হওয়ার অন্যতম কারণ ঘুম কম হওয়া। তাই সব কাজের মধ্যেই আপনাকে ঘুমের সময় বের করতে হবে। আপনার কাজগুলোকে সঠিকভাবে বিন্যাস করতে হবে। বাবু যখন ঘুমাবে তখন আপনিও ওর সঙ্গে ঘুমিয়ে নেবেন। এজন্য পরিবারের অন্য সদস্যদের মাকে সহযোগিতা করতে হবে। শিশুর মা যেনো পর্যাপ্ত ঘুমানোর সুযোগ পায় সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

সংসারের কিছু কাজ ভাগ করে দেয়া

যে সংসার আপনি একাই সামলাতেন একটা সন্তান জন্ম নেয়ার পর সেই সংসার আপনার একার পক্ষে সামলানো খবই দুরুহ। এজন্য পরিবারের অন্য সদস্য থাকলে তাদের কিছু কার ভাগ করে দিতে হবে। যেনো মায়ের উপর কাজের চাপ কিছুটা কমে। কেননা মাকে শিশু কেন্দ্রীক অনেক ব্যস্ত থাকতে হয়।

স্বামীকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করা

একটি সংসার সুখি সমৃদ্ধ করতে স্ত্রীর পাশাপাশি স্বামীর ভূমিকা কোনো অংশে কম নয়। স্বামীই পারে স্ত্রীকে একজন উপযুক্ত বন্ধুর মতো সাপোর্ট দিতে। তাই তাকে বুঝতে হবে কখন তার স্ত্রীকে কাজে সহযোগিতা করতে হবে। যেসব স্বামী জানেন না সে কিভাবে সন্তান পালনে স্ত্রীকে সাহায্য করতে পারে, তিনি এই পোস্টটি পড়তে পারেন: সন্তান পালনে বাবার দায়িত্ব ও কর্তব্য

সবকিছু স্বাভাবিকভাবে নেয়া

বাচ্চা নিয়ে মায়ের অনেক কষ্ট করতে হয়। কিন্তু তারপরও আপনার ভালো আপনাকেই থাকতে হবে। এজন্য আপনার যা যা দরকার তাই করতে হবে। কারণ আপনি ভালো না থাকলে আপনার সন্তান ভালো থাকবে না। আপনার প্রয়োজনীয় আরাম আয়েশ করে নিতে হবে। সর্বোপরি বাচ্চা লালন পালন করতে যে অতিরিক্ত কষ্ট তা আপনাকে স্বাভাবিকভাবেই গ্রহণ করতে হবে। চেষ্টা করতে হবে মানিয়ে নেয়ার জন্য।

মানষিক ডিপ্রেশন বলেন আর মেজাজ খিটখিটে হওয়াই বলেন এগুলো নির্ভর করে আপনার মনের উপর। আপনি ভালো থাকার চেষ্টা করলেই আপনি ভালো থাকতে পারবেন। আমা করি আমার দেয়া এই পরামর্শগুলো এই ভালো থাকার চেষ্টায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আপনি ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠুক আপনার শিশু আগামীর ভবিষ্যত।

কিওয়ার্ড: মানষিক ডিপ্রেশন কাটানোর উপায়, সন্তান জন্ম দেয়ার পর মেজাজ খিটখিটে হওয়া, মায়েদের বিষন্নতা কাটানোর উপায়, সন্তান পালনে বাবার কর্তব্য, মায়েদের হতাশা কাটাবেন যেভাবে, নতুন মায়েদের বিষন্নতা কেনো

Lovely Azad: I am Lovely Azad, a girl, wife and Mom. Also I am a Passionate Blogger and Social Media Expert. I love to write about kid, mom, food and any social trend. Please read and express your views about my write up.
Related Post