শিশু সন্তান লালন পালনে বাবার দায়িত্ব ও কর্তব্য

স্বামী-স্ত্রীর ভালবাসার পূর্ণতা পায় সন্তানের মাধ্যমে। একটি সন্তান অনেক সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেকার দূরত্ব কমিয়ে দেয়। সন্তানের দিকে তাকিয়ে দুজন মানুষ সংসারে মনোযোগি হয়।

কিন্তু এই সন্তান পালনের ব্যাপারে আমাদের সমাজে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মনে করা হয়, স্বামী শুধু আর্থিক বিষয়টি দেখবে, আর স্ত্রী সন্তান লালন পালনের বিষয়টি দেখবে। এই শ্রেণীর লোকেরা বেমালুম ভুলে যান, সন্তান কেয়ারিং এর ক্ষেত্রে মায়ের তুলনায় বাবার ভূমিকাও কম নয়।

বাবা কিভাবে সন্তানের মানসিক বিকাশ, বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে তা আমার অভিজ্ঞতার আলোকে তুলে ধরলাম। এই পোস্টটি হয়তো বেখেয়ালি বাবাদের মনে করিয়ে দেবে, না তোমারো অনেক দায়িত্ব আছে সন্তান সুস্থ সবলভাবে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে।

মায়ের বিশ্রামের সুযোগের জন্য

একজন মাকে সারাদিন অনেক পরিশ্রম করতে হয়। সংসারের কাজ কর্ম ছাড়াও ছোট বাচ্চা নিয়ে তাকে সবসময়ই ব্যস্ত থাকতে হয়। বাচ্চা ঘুমালেও মা অনেক সময় ঘুমাতে পারেন না। সাংসারিক ব্যস্ততা বা দিনের বেলায় অন্য মানুষের আনাগোনায় ঘুমের ব্যাঘাত হয়। আবার অনেক বাচ্চা আছেন যারা রাতে জেগে থাকেন। তাদের নিয়ে মায়েরা নিদারুন কষ্ট ভোগ করে থাকেন। তাই মায়েদের ঘুমের জন্য সুযোগ তৈরি করা স্বামীরই দায়িত্ব। তাকে কাজে সহযোগিতা করে বিশ্রামের সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, মা ভালো থাকলে সুস্থ থাকলে সন্তানও ভালো থাকবে সুস্থ থাকবে। 

অফিস শেষে বাচ্চার জন্য সময় বরাদ্দ রাখা

শুধু মায়ের কাছে থাকতে থাকতে বাচ্চাদের মধ্যে একঘেয়েমি চলে আসে। বাচ্চাদের একঘেয়েমি দূর করার জন্য সঙ্গী বদল করা আবশ্যক। এজন্য বাবা হতে পারেন সবচেয়ে উত্তম বিকল্প। আপনার সন্তানকে নিয়ে আপনি যেভাবে খেলতে পারবেন অন্য কেউ তা পারবে না। আপনার সঙ্গে হেসে খেলে বাচ্চাও অনেক মজা পাবে বলে আমার বিশ্বাস। এজন্য অফিসের কাজ শেষে আপনার প্রিয় সন্তানকে সময় দিন। এতে সংসারের প্রতি আপনার যেমন মায়া বাড়বে, তেমনি সন্তানও সুস্থ সবলভাবে বেড়ে ওঠবে।

বাবার সঙ্গে একটু খুনসুটি

শিশুর মাকে সচেতন করে দেয়া

সারাদিন অনেক পরিশ্রমের দরুন সন্তানের অনেক প্রয়োজনীয় বিষয়ই মা ভুলে যান। এমন অনেক বিষয় থাকে যা মাকে মনে করিয়ে দিতে হয়। সন্তানের বাবা এক্ষেত্রে মাকে মনে করেয় দিতে পারেন যে বাবুর এখন এটা লাগবে।

শিশুর মায়ের মনে সাহস জোগানো

একটা সন্তান লালন পালন করা অনেক বড় কাজ। অনেক ধৈর্য ও পরিশ্রমের ব্যাপার। বিভিন্ন সময় রোগ ব্যাধিতে বাচ্চাকে আক্রান্ত করতে পারে। এসময় মায়েরা সহজেই ভেঙে পরে। কারণ তারা প্রকৃতিগতভাবেই দুর্বল মনের। তাই তাদের মনোবল ঠিক রাখার জন্য স্বামীকেই সাহস জোগাতে হয়। সব যে ঠিক হয়ে যাবে একথা শিশুর বাবাকেই বলতে হয়।

সংসারের কাজে সহযোগিতা করা

একক পরিবার হলে সংসারের সব কাজ মাকে একাই করতে হয়। এক্ষেত্রে অবসরে সংসারের টুকি টাকি কাজে সহযোগিতা করলে তার অনেক হেল্প হয়। একইসঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কও অনেক মধুর হবে।

আর্থিক স্বচ্ছলতা

আমাদের এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে স্ত্রী-সন্তানের আর্থিক ভরণ-পোষণের দায়িত্ব স্বামীর। তিনিই সব দেখা শোনা করবেন। এক্ষেত্রে সন্তানের জন্য কখন কোনটা রাগবে তা প্রয়োজন অনুসারে এনে দেয়া বাবারই কাজ।

 

 

Al Amin Azad: একজন ওয়েব ডেভেলপার যিনি লিখতেও ভালবাসেন। জড়িয়ে আছেন সাংবাদিকতার সঙ্গে। বর্তমানে একুশে টেলিভিশনে ডিজিটাল মিডিয়া এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও রয়েছে স্বল্প পরিসরে হোস্টিং ডোমেইনের ব্যবসা। এক সন্তানের জনক আজাদ ভাল স্বামী হওয়ার চেষ্টা করেন। খেতে ভালবাসেন বাবা-মার প্রিয় এই সন্তান :)
Related Post