খুব কম ভোজন রসিক বাঙালিই আছেন যে বিরিয়ানি পছন্দ করেন না। শহরে বা গ্রামে সবাই বিরিয়ানি খেতে ভালবাসেন। বাহিরে হোটেল রেস্টেুরেন্টে গেলে মজার স্বাদের বিরিয়ানি খেতে পারবেন। কিংবা বাহির থেকে কিনে এনে খেতে হবে। কিন্তু নিজে রান্না করতে পারলে তো অপেক্ষা করতে হবে না। যেকোনো সময় আপনার প্রিয়জনদের সামনে হাজির করতে পারবেন নিজ হাতে রান্না করা মজার স্বাদের বিরিয়ানি। আজকে বাসায় খুব সহজেই রান্না করা যায় গরুর মাংসের বিরিয়ানির রেসিপি তুলে ধরা হল।
গরুর মাংসের বিরিয়ানি রান্না করতে যা যা উপকরণ লাগবে
# গরুর মাংস ১ কেজি বা এর কম বেশি
# পোলার চাল হাফ কেজি
# আদা বাটা ২ চা চামচ
# রসুন বাটা ২ চামচ
# জিরা বাটা ২ চামচ
# ধনিয়া গুরা ১ চামচ
# মরিচের গুড়া ১ চামচ বা আপনার স্বাদমতো
# এলাচ ৩ টি
# দারুচিনি ৪ টি
# তেজপাতা ৩ টি
# টকদই ৩ চা চামচ (বাসায় লেবু দিয়ে এক কাপ দুধকে টক দই বানাতে পারেন)
# রান্নার তেল ২৫০ গ্রাম
# জয়ত্রি, জয়ফল, শাহি জিরা একত্রে পাউডার ১ চা চামচ (বাজারে যে বিরিয়ানির মসলঅ কিনতে পাওয়া যায়, ওটা দিলে এসব আর লাগবে না )
# লবন পরিমান মত
# চিনি ২ চামচ
# পিয়াজ আধা কাপ
# কয়েকটা আস্ত কাচা মরিচ
কিভাবে রান্না শুরু করবেন গরুর মাংসের বিরিয়ানি
# প্রথমে মাংস ধুয়ে পানি ঝরিয়ে আদা, জিরা, রসুন, ধনিয়া, টক দই, জয়ত্রি, জয়ফল, শাহি জিরা একত্রে পাউডার আধা চা চামচ এবং তেল, লবণ মাংসে দিয়ে ভাল করে ম্যারিনেট করে নরমাল ফ্রিজে ২০ মিনিট রেখে দিতে হবে।
# এই সময় পোলাওয়ের চাল ধুয়ে ৩০ মিনিট জন্য ভিজিয়ে রাখতে হবে। ভিজিয়ে রাখলে পোলাওটা ঝরঝরে হয়। ৩০ মিনিট পর পানি ঝরিয়ে চালনিতে রাখতে হবে।
# ২০ মিনিট পর মাংস ফ্রিজ থেকে বের করে নিতে হবে। ফ্রাই প্যান গরম হলে মাংস গুলোকে সিদ্ধ করার জন্য বসাতে হবে। কিছু সময় পর পর মাংস নেড়ে দিন। ৪০মিনিট পর বা মাংস সিদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে ফেলুন। আমাদের বিরানির জন্য মাংস রান্না করা শেষ।
# মাংস রান্নার পাশাপাশি দুটো চুলা থাকলে পাশের চুলায় পানি বসিয়ে দিতে পারেন গরম করার জন্য। গরম পানি আমাদের দরকার হবে একটু পরেই পোলাও রান্না করার জন্য।
# মাংসের পরে পোলাও রান্না করার জন্য আবার প্যানে তেল দিয়ে গরম করতে হবে। তেল গরম হলে এলাচ, দারুচিনি, তেজপাতা দিয়ে পিয়াজ কুচি ছেড়ে দিতে হবে। পেয়োজের রং বাদামী বর্ণ ধারণ করলে এর মধ্যে চাল ছেড়ে ৫ মিনিটের মতো ভুনতে হবে। তারপর গরম করা পানি ঢেলে দিতে হবে। আধা কেজি চালে এক কেজি পানি দিতে হবে। এরপরে লবণ দিয়ে দিন পরিমান মতো।
# চুলার জ্বাল মিডিয়াম আচে রাখুন। ৭/৮ মিনিট পর চাল আধা ফোটা হলে অর্থাৎ অল্প অল্প পানি থাকা অবস্থায় সিদ্ধ করা মাংস দিয়ে দিন। কিছু পানি থাকা অবস্থায় মাংস দিলে তা পোলাওয়ের সঙ্গে ভালোভাবে মিশে যায়। নয়তো মাংস পোলাওয়ের সর্বত্র ছড়ায় না, আর পোলাও জায়গায় জায়গায় সাদা দেখা যায়। যা দেখতে ভালো লাগে না।
# মাংস দেয়ার পরেই জয়ত্রি, জয়ফল, শাহি জিরা পাউডার একত্রে আধা চা চামচ পরিমান দিয়ে দিন। এগুলো বিরিয়ানির স্বাদে ভিন্ন টেস্ট এনে দেবে। তবে এগুলো ছাড়াও সুস্বাদু মানের বিরিয়ানি হবে।
# চিনি দিয়ে দিন ২ চামচ। তবে চিনি দিতে হবে এমন নয়, চিনি ছাড়াও রান্না করা যাবে। অনেকে ঘি দিতে পারেন আবার নাও দিতে পারেন।
# চালের সাথে সিদ্ধ করা মাংস দিয়ে মিলিয়ে দিন এবং নেড়ে চাল মাংস উপর নীচ করে দিন। চুলার আচ একদম অল্প আচে রাখুন। এরপর একদম চুপচাপ ৫ মিনিট রাখুন। এরমধ্যে বিরিয়ানির পানি শুকিয়ে গেলে রুটি স্যাকা তাওয়ার উপর বিরিয়ানির প্যানটা বসিয়ে দিন। তাওয়ার উপর দেবার পর নেড়ে দেখুন পানি আছে কিনা। লবন ঠিক মত হলে খেয়ে স্বাদ গ্রহন করুন।
# চুলার জ্বাল বন্ধ করে দিন। হয়ে গেল ঝটপট বিরিয়ানি রান্না। এবার রান্না করা বিফ বিরিয়ানি প্লেটে শসা, সালাদ দিয়ে পরিবেশন করুন।
আপনি যদি নতুন রাধুনি হয়ে থাকেন, তবে আপনার প্রিয়জনদের এতো স্বাদের বিরানি রান্না করে চমকে দেয়ার জন্য যথেষ্ট হবে।
বিরিয়ানি রান্নায় যে সমস্যা হতে পারে
# পোলাও রান্নার সময় পানির হিসেবটা খুবই গুরুত্বপূর্ন। আপিনি পানি কম বেশি দিলে বিরিয়ানিটা বেশি শুকনো বা গলে যাবে। খেয়ে স্বাদ পাওয়া যাবে না। এজন্য যে পাত্রে চাল দেবেন, সেই পাত্রের দ্বিগুণ পরিমান গরম পানি দেবেন।
# মাংস কম বেশি যাই দেন বিরিয়ানি হয়ে যাবে, সেক্ষেত্রে কম-বেশি মাংসের ক্ষেত্রে মসলা কম বেশি করে নেবেন।
আপনাদের রান্না করা বিরিয়ানি কেমন হয়েছে তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা তাও জানাবেন। পারলে অবশ্যই সমাধান দেয়ার চেষ্টা করবো। হ্যাপি কুকিং।