মিষ্টি খেতে আমরা কে না ভালোবাসি? মিষ্টির প্রতি অনেকের আমাদের আবার উন্মাদনা রয়েছে। মিষ্টি খাওয়ার জন্য কি না করি? অনেক সময় বাসায় বানিয়ে আবার অনেক সময় বন্ধুদের নিয়ে কোন নামকরা রেস্টুরেন্টে চলে যাই মিষ্টি খাওয়ার জন্য।
এবার আমি আপনাদের মিষ্টির জন্য এমন একটা জায়গার সন্ধান দেব, যেখানে আপনি মিষ্টি খেতে পারবেন আবার বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতেও পারবেন। জমিয়ে আড্ডা দিতে পারবেন কিছুটা সময়।
হ্যাঁ আমি রাজধানীর অদূরে পূর্বাচলে মিষ্টির দোকানগুলোর কথাই বলছি। রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে নীলা বাজারে পাবেন হরেক রকমের মিষ্টি। রসগোল্লা, চমচম, রসমালাই, কালোজাম, বালিশ মিষ্টি, দই থেকে শুরু করে কী নেই সেখানে। চোখের সামনে আপনি দেখবেন গরম গরম মিষ্টি বানানো হচ্ছে। আপনি চাইলে সেখান থেকে খেয়েও আসতে পারেন, আবার পরিবারের জন্য নিয়েও আসতে পারে। দাম নিয়ে একদম চিন্তা করবেন না। খুবই কম দামের মধ্যে পাবেন।
কি কি মিষ্টি পাবেন পূর্বাচলের নীলা বাজারে
আপনি পূর্বাচলের নীলা বাজারে অনেক প্রকার মিষ্টি পাবেন। এরমধ্যে রয়েছে রসগোল্লা, চমচম, কালোজাম, বালিশ মিষ্টি, সন্দেশ, ছানার মিষ্টি ইত্যাদি। সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনার চোখের সামনে মিষ্টিগুলো বানানো হচ্ছে, দামও কম।
পূর্বাচলের মিষ্টিগুলোর দাম কেমন
দাম নিয়ে একদম ভাববেন না। নীলা বাজারের মিষ্টিগুলোর দাম আপনার সাধ্যের মধ্যেই থাকবে। রাজধানীর মধ্যের মিষ্টির দোকানগুলোতে যে মিষ্টির দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। সেগুলোই আপনি নীলা বাজারে পাবেন মাত্র ১৫০ টাকা। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? অবিশ্বাস্য লাগছে? আপনি অবশ্য আরো কিছু কম দামে পেতে পারেন যদি দামাদামি করতে পারেন। আরো ১০ থেকে ২০ টাকা কমাতে পারবেন।
আর রসমালাই আপনি কিনতে পারবেন ২০০ টাকা কেজি দরে। এগুলোও আপনি আরো ২০ টাকা কমাতে পারেন দামাদামি করে। এছাড়াও স্পঞ্জের মিষ্টি আপনি পাবেন ২০ টাকা পিস হিসেবে। যদি ১৪ পিস একসঙ্গে কেনেন তবে ২০০ টাকা পাবে।
পূর্বাচল নীলা বাজারে মিষ্টির দাম এত কম কেন
মিষ্টি বিক্রেতারা কিভাবে পারে এত কম দামে মিষ্টি দিতে? যেখানে রাজধানীর মধ্যেই মিষ্টির দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়।
এখানে কম দামে মিষ্টি বিক্রি করতে পারার প্রধান কারণ হচ্ছে সহজলভ্য কাঁচামাল। পাশের গ্রাম থেকে দুধ সংগ্রহ করা হয়। আর দোকান ভাড়া কম হওয়ায় কোনো সমস্যা হয় না। এছাড়া লোকমুখে স্থানটির কথা ছড়িয়ে যাওয়ায় বেচাবিক্রিও প্রচুর হয়। তাই কম লাভে তারা বেশি বিক্রি করে।
নীলা বাজারের মিষ্টির গুণগত মান কেমন
আপনার মনে প্রশ্ন উঠতেই পারে নীলাবাজারে মিষ্টিগুলোর মান কেমন? শুধু দামে কম হলেই যে আপনি কিনবেন তা তো নয়। আপনি চাইবেন কম দামে বেশি ভালো মিষ্টি। সেই হিসাব করলে দাম কম ঠিক আছে। কিছু মিষ্টির কোয়ালিটি অনেক ভালো, রাজধানীর মধ্যে অনেক দোকান গুলোর মতই। কিন্তু কিছু কিছু মিষ্টির কোয়ালিটি আমার কাছে ভালো মনে হয় নি। আমি বলতে চাচ্ছি রাজধানীর দোকান গুলোর মত নয় অপক্ষোকৃত নিম্নমানের।
স্পঞ্জের যে মিষ্টি গুলো নীলা বাজারে বিক্রি করে সেগুলোর মান আমার কাছে অত ভালো মনে হয়নি। কালোজামগুলো আমার কাছে এভারেজের তুলনায় কম গুণগতমানসম্পন্ন মনে হয়েছে।
আপনি কম দামি যে সবসময় ভালো মিষ্টি পাবেন তা নয়। আপনাকে দেখে শুনে বুঝে কিনতে হবে কোনটি ভালো মিষ্টি। আপনি যদি নতুন ক্রেতা হয়ে থাকেন সবচেয়ে ভালো হবে প্রথমে পরখ করে দেখা, এরপরে মিষ্টি কিনা।
কিভাবে যাবেন পূর্বাচল নীলা বাজারে মিষ্টির দোকান
নীলাবাজারের মিস্টির দোকানে যাওয়া একেবারেই সহজ। আপনি যেখানেই থাকেন না কেন নীলা বাজারে যাওয়ার জন্য আপনি প্রথমেই যাবেন রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায়। বিশ্বরোডের মোড়ে আপনি বিআরটিসি বাস পাবেন, যেগুলো পূর্বাচলের দিকে যায়। ওখানে বাসের কাউন্টার আছে সেখান থেকে ১৫ টাকা দামের টিকিট দিয়ে নীলা বাজারের জন্য টিকেট নিয়ে নিন। একটু পরপর এখান থেকে বাস ছেড়ে যায়। আপনাকে নামিয়ে দেবে নীলা বাজারে। বাস থেকে নেমে কারো কাছে খোঁজ নিয়ে ঢুকে যেতে পারেন মিষ্টির দোকানগুলোতে।
কুড়িল বিশ্বরোড থেকে নীলা বাজার এর দূরত্ব মাত্র ৭ কিলোমিটার চাইলে আপনি সিএনজি নিয়েও যেতে পারেন সেখানে।
নীলা বাজারে মিষ্টি ছাড়া আর কি কি দেখতে পাবেন
নীলা বাজারটি চালু হয়েছে মূলত পূর্বাচলের জন্য। এটি ঠিক পূর্বাচলের মুখে। পূর্বাচল প্রজেক্ট যারা ঘুরতে আসেন তারা এখান থেকে ফেরার সময় সবজি কাঁচা বাজার কিনে নিয়ে যান। এখান থেকেই মূলত মিষ্টির দোকানগুলো চালু হয়েছে।
আপনি দেখতে পাবেন পূর্বাচল প্রজেক্ট, এছাড়াও আরো দেখতে পাবেন পাশেই তুরাগ নদী। শরতকালে গেলে দেখতে পাবেন শুধু কাশবন আর কাশবন।
পূর্বাচলের মিষ্টির দোকানগুলোতে মিষ্টিগুলো বানানো হবে আপনার চোখের সামনেই। গরম গরম মিষ্টি দেখলেই আপনার খেতে ইচ্ছে করবে। জিভে জল এসে যাবে হরেক রকমরে মিষ্টি দেখে। তো দেরি না করে একদিন ঘুরে আসুন রাজধানীর অদূরে পূর্বাচল নীলা বাজার থেকে, পরখ করে দেখুন মিষ্টির স্বাদ। স্বজনদের জন্য নিয়েও আসতে পারেন।