বিয়ে বাড়িতে বা বিভিন্ন দাওয়াতের অনুষ্ঠানে খাবারের শেষ পর্যায়ে মিষ্টি সুস্বাদু জর্দা কার না ভালো লাগে? মনে চায় বাড়িতেও যদি এমন জর্দা রান্না করে খেতে পারতাম। কিংবা জর্দা রান্নার রেসিপি জানা থাকলে বাসার ঘরোয়া দাওয়াতে অতিথিদের সামনে পরিবেশন করা যায় চমৎকার স্বাদের জর্দা। জর্দা রান্না খুব কঠিন কিছু না। শুধু একটু মন দিয়ে করলে ১ঘণ্টার মধ্যেই হয়ে যাবে মজার স্বাদের জর্দা।
বাসায় রান্না করতে গেলে অনেক বেশি উপকরণ যোগাড় করা যেহেতু ঝামেলা, তাই আমি একেবারে সাধারণ ও সহজ উপায়ে জর্দা রান্নার রেসিপি ও পদ্ধতি বর্ণনা করব। যাতে আপনাদের খুব বেশি ঝামেলা না হয়। তবে কেউ চাইলে সব কিছু যোগাড় যন্ত্র করে রসুইঘরে বসতে পারেন। তবে এবার শুরু করা যাক।
শুরুর আগে ১ পোয়া চালের জর্দা রান্না করতে কি কি লাগবে তা জেনে নিই।
জর্দা রান্নার উপকরণ:
১. এক পোয়া পোলাওয়ের চাল (তবে সাধারণ চিকন চাল হলেও সমস্যা নেই)
২. এক পোয়া চিনি
৩. এক টেবিল চামচের একটু বেশি জর্দার রং
৪. দারুচিনি, এলাচ দুইটি, কমলার খোসা কয়েক পিচ (যদি থাকে)
৫. এক কাপ সয়াবিন তেল (অনেকে ঘি ব্যবহার করে)
৬. কিশমিশ ৭-৮ টি
৭. লাল-সাদা রংয়ের ছোট মিষ্টি (মিষ্টির দোকানে গিয়ে জর্দার গুটি বললেই পাবেন। এটা দেয়া মোটেও জরুরী নয়। অনেকে পরিবেশনের সময় দিয়ে থাকে।)
সুস্বাদু জর্দা রান্না করার উপায়:
১) প্রথম চাল ধুয়ে ছাঁকনি দিয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। চার কাপ ফুটন্ত পানি, দুটি তেজ পাতা, সামান্য লবণ, কমলার খোসা একটা, ১ চা চামচ তেল ও জর্দার রং এবং চাল চুলায় দিয়ে সিদ্ধ করতে হবে।
২) চাল বেশি সিদ্ধ না করে ৭৫/৮০ ভাগ হলে চালনিতে ঢেলে সেকে নিতে হবে। পানি ভালভাবে ঝরিয়ে ট্রেতে বিছিয়ে ফ্যানের নিচে রাখুন, যেন বাতাসে পানি শুকিয়ে যায়। ঠাণ্ডা হলে কমলার খোসা সরিয়ে ফেলুন। এসময় ভাতে জরদার রং চলে আসবে।
৩) এবার ফ্রাই প্যানে তেল গরম করে মিডিয়াম আঁচে আস্ত গরম মশলাগুলো দিন। গরম মশলা একটু ভাজা ভাজা হলে, এরমধ্যে চিনি দিয়ে দিন। এরসঙ্গে পানি দিয়ে নাড়তে থাকুন। এবার কিসমিস দিয়ে দিন। নেড়ে নেড়ে চিনি ও পানি মিশিয়ে ফেলুন। চিনি যা দেয়ার এখনি দিয়ে দিন, ভাত দেয়ার পরে চিনি দিলে তা আর গলবে না। ফলে আপনার জর্দাটা নস্ট হয়ে যাবে।
৪) তেল, চিনি, পানির মিশ্রন বলক আসলে সিদ্ধ ভাত দিয়ে নেড়ে নেড়ে মেশাতে হবে। ফ্রাই প্যানে তেল দেয়া থেকে শুরু করে এপর্যন্ত আসতে আপনার ৪-৫ মিনিট সময় লাগবে। ভাত চিনির মিশ্রনের সঙ্গে ভালোভাবে মেশানো হলে ঢেকে দিন। চুলার আঁচ মিডিয়াম থেকে কমিয়ে ২০ মিনিট জ্বালাতে থাকুন। এসময় মাঝে মধ্যে নাড়া চাড়া দিতে হবে, যেনো ভাত জড়িয়ে না যায়।
৫) ২০ মিনিট পরে জর্দা প্রায় প্রস্তুত হয়ে যাবে। এরপরে নিভু নিভু জ্বালে আরও কয়েক মিনিট (৫-১০ মিনিট প্রয়োজন অনুসারে) তাপ দিন। ভাত এরইমধ্যে একদম ফুটে যাবে।
৬) আপনার রান্না করা জর্দা প্রস্তুত। এবার প্লেটে জর্দার সঙ্গে ছোট লাল-সাদা মিষ্টির দানা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
জর্দার রান্নার আগের যে কথা না জানলেই নয়
# পরিমানের তুলনায় চিনি বেশি হলে, আপনার জর্দা হবে না। অতিরিক্ত চিনিতে ভাত ঝটা হয়ে যাবে।
# ভাত বেশি নরম হয়ে গেলে জর্দা ভালো হবে না। জর্দার বদলে তখন হালুয়া মিষ্টি জাও হয়ে যাবে :)। আবার বেশি শক্ত থাকলেও খেতে মজা পাবেন না।
# চাল সিদ্ধ করার সময় ১ চা চামচ তেল দিলে ভাত নরম হবে না। ভাত এতে ঝরঝরে থাকবে।
# জর্দার অতিরিক্ত উপকরণ হিসেবে বাদাম, কিসমিস, মিষ্টি এগুলো দিতে হবে এমন নয়। এটা নির্ভর করে আপনি কেমন করে পরিবেশন করতে চান।
# প্রথমবার জর্দা রান্না করতে গিয়ে যদি আপনি নষ্ট করে ফেলেন, তবে এতে হতাশার কিছু নাই। বেশিরভাগ সময়ই ভাত বেশি ফুটা-কম ফুটা নিয়ে ঝামেলা হয়। এটা কয়েকবার রান্না করার পরেই আপনার আন্দাজে চলে আসবে যে কতটুকু সিদ্ধ করতে হবে।
====== সার্চিং অপশন ======
Leave a Reply